বেইজিং বৈঠকে চীন-রাশিয়া-ইরান: পরমাণু ইস্যুতে কূটনৈতিক সমাধানের আহ্বান

China Foreign Office

ইরানের পরমাণু ইস্যুতে বেইজিং বৈঠক: সংলাপ পুনরুদ্ধারের পথে নতুন উদ্যোগ

বেইজিং, ১৪ মার্চ ২০২৫: চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং আজ এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জানান যে, চীন, রাশিয়া ও ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের শেষে একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে ইরানের (Iran) পরমাণু ইস্যুতে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমাধানের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে

বৈঠকে চীনের পাঁচ দফা প্রস্তাব

চীনের (China) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ইরানের পরমাণু ইস্যু সমাধানে পাঁচ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। আলোচনায় তিন পক্ষই সম্মত হয় যে—

  1. কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সংলাপই একমাত্র গ্রহণযোগ্য ও কার্যকর পথ
  2. নিষেধাজ্ঞা, চাপ এবং সামরিক হুমকি ইস্যুটিকে আরও জটিল করে তুলবে
  3. পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি (NPT) মেনে চলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে
  4. ইরানের পরমাণু কর্মসূচি যে কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে, তা স্বীকার করা হয়েছে
  5. আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA)-এর সাথে ইরানের সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে

পরিস্থিতির গুরুত্ব: নতুন সংকটের সম্ভাবনা

ইরানের পরমাণু ইস্যু এখন অত্যন্ত সংকটপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে এবং পুনরায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। চীন, রাশিয়া ও ইরান সম্মিলিতভাবে এই সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে কাজ করছে। তিন দেশই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিষেধাজ্ঞার পথ ত্যাগ করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজার আহ্বান জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

✔ চীন ও রাশিয়া স্পষ্টভাবে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
✔ ইরান আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) সাথে তার সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
✔ বৈঠকের ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

চীন বলেছে, “নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক চাপ কোনো স্থায়ী সমাধান আনতে পারে না, বরং সংলাপ ও সহযোগিতাই এর একমাত্র পথ।”

চীনের অবস্থান: ন্যায্য ও টেকসই সমাধানের ডাক

চীন একটি ন্যায়সঙ্গত, ভারসাম্যপূর্ণ ও টেকসই সমাধানের পক্ষে কাজ করতে প্রস্তুত, যাতে আন্তর্জাতিক পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নীতি বজায় থাকে এবং বিশ্ব ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হয়।

এই বৈঠক ভবিষ্যতে ইরান ও পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন আলোচনার পথ খুলে দিতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *