June 15, 2025
যুদ্ধ গীতা
মহাভারতের গীতা, যা বশিষ্ঠ গোত্রের কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন কর্তৃক রচিত, সম্রাট ধৃতরাষ্ট্র এবং তার ভৃত্য সঞ্জয়ের মধ্যে একটি সংলাপের আকারে উপস্থাপিত হয়েছে। এই সংলাপে, সঞ্জয় কুরু বংশের অর্জুন এবং যদু বংশের বাসুদেব কৃষ্ণের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের নীতি সম্পর্কে একটি গভীর বক্তৃতা প্রদান করেন।
যুদ্ধ গীতার উদ্দেশ্য প্রথমদিকে দার্শনিক মনে হতে পারে, যা ভিক্ষুদের মধ্যে পাঠ করার উপযোগী। তবে প্রকৃতপক্ষে, গীতার মূল উদ্দেশ্য হল এক অলস এবং ধীর সেনাপতিকে যুদ্ধের জন্য সক্রিয় করা বা অনুপ্রাণিত করা। এটি পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার কথা বলে, যা সাধারণ কূটনৈতিক দক্ষতা ব্যবহার করে অর্জন সম্ভব নয়। এই যুদ্ধের জন্য যে মানসিক প্রস্তুতি, ত্যাগ এবং দৃঢ় সংকল্প প্রয়োজন, তা গীতার মাধ্যমে অর্জুনের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সঞ্জয় অন্ধ রাজা ধৃতরাষ্ট্রর কাছে তার বক্তৃতার মাধ্যমে এটি উপস্থাপন করেছিলেন।
গীতার এই যুদ্ধ নীতি আসলে অঙ্গিরস অথর্বের বৈদিক ঐতিহ্য অনুসরণ করে বজ্রজল তন্ত্রের মাধ্যমে বর্ণিত হয়েছে, যা মহাভারতের গীতার প্রকৃত অর্থ এবং তাৎপর্যকে উন্মোচিত করেছে। যুদ্ধ গীতা, ধনুর বিদ্যার একটি অঙ্গ হিসেবে, বৈদিক দাস মহাবিদ্যা পদ্ধতির অন্তর্গত। এটি বেদাঙ্গ, যা একজন যোদ্ধার অবশ্যই শেখা উচিত।
গীতার মাধ্যমে পৃথিবী শাসন করার জন্য যে চূড়ান্ত শক্তির প্রয়োজন তা স্পষ্ট করা হয়েছে। এটি শুধুমাত্র একটি দার্শনিক আলোচনা নয়, বরং এটি একজন অলস, বিরক্ত এবং দ্বিধাগ্রস্ত সেনাপতির জন্য জীবনের লক্ষ্যকে উপলব্ধি করার একটি নির্দেশিকা। গীতার যুদ্ধ দর্শন কেবলমাত্র ধর্মীয় নয়, বরং নৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিফলনও। কূটনীতি বা শান্তির পদ্ধতিতে যে সমাধান সম্ভব নয়, তা শুধুমাত্র যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জন করা যায়।
যুদ্ধ গীতা প্রথমে সাহিত্য সম্রাট জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এখান থেকে এটি পড়া যেতে পারে।